আর্টিকেল লেখা এবং আর্টিকেল র্যাঙ্ক করানো কখনোই এক বিষয় নয়। আর্টিকেল
র্যাঙ্ক করানোর জন্য দরকার সঠিক জ্ঞান ও কৌশল। আর্টিকেল র্যাঙ্ক করানোর
পিছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কাজ করে। আমি একজন আর্টিকেল রাইটার হিসাবে ৪ বছর
বিভিন্ন প্লাটফর্মে কাজ করছি। শুধু শব্দ ভাণ্ডার আর ব্যাকরণ জানলেই
আর্টিকেল র্যাঙ্ক করা যায় না।
আর্টিকেল র্যাঙ্ক চার্ট
আর্টিকেল র্যাঙ্ক করানোর জন্য বিভিন্ন বিষয় পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা পালন
করে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কন্টেন্ট রাইটিং ও এস-ই-ও (SEO)। SEO এর পূর্ণরূপ -
(Search Engine Optimization). এর মাধ্যমে গুগলে বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখানো হয়। যেই
ওয়েবসিতটের এস-ই-ও রাঙ্কিং যত ভাল তার রাঙ্ক তত উপরে থাকে। আর্টিকেল র্যাঙ্ক
করানো মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়, তবে আমি আপনাদের সুবিধার্থে কিছু উপায় সহজভাবে
তুলে ধরার চেষ্টা করব।
কনটেন্ট রাঙ্কিং হলো একটি ওয়েবসাইট বা ব্লক পোস্ট যা গুগল বা অন্য সার্চ
ইঞ্জিনে কত নম্বর বা কত পজিশনে দেখানো হচ্ছে বা দেখা যাচ্ছে তা বোঝানোর জন্য
ব্যবহৃত একটি শব্দ মাত্র।
কনটেন্ট রাঙ্কিং বিভিন্ন বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। সেগুলো হলঃ
কিওয়ার্ড অপটিমাইজেশন
ব্যাক লিঙ্ক
কনটেন্ট কোয়ালিটি
ইউজার এক্সপেরিয়েন্স
ডুয়েল টাইম
CTR (Click Through rate) ইত্যাদি।
কিওয়ার্ড রিসার্চ এর মাধ্যমে রাঙ্কিংঃ
০.১ কিওয়ার্ড রিসার্চ একটি প্রক্রিয়া গুগল এবং বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে আমরা যা
সার্চ দেয় বা অডিয়েন্সরা শব্দ বা বাক্য সার্চ দেয় এগুলোকেই
কিওয়ার্ড বলে। একটি ভালো কনটেন্ট লিখতে গেলে আমাদেরকে অবশ্যই কিওয়ার্ড
রিসার্চ করতে হবে যে কিওয়ার্ডটা বেশি বার ব্যবহৃত হয়েছে বা দর্শকরা সার্চ
দিয়েছে যেটা আমাদের কন্টেন্ট এর সাথে সামঞ্জস্য ওইরূপ কিওয়ার্ড বাছাই করতে
হবে। একটি ভাল কনটেন্ট এর জন্য ভাল কিওয়ার্ড গুরুত্বপূর্ণ ও আবশ্যক। ভুল
কিওয়ার্ড দিয়ে কখনো কনটেন্ট রাঙ্ক করা যায় না।
০.২ ব্যাকলিঙ্ক হচ্ছে একটি লিঙ্ক যা একটি ওয়েবসাইট থেকে অন্য আরেকটি ওয়েবসাইটে
দেওয়া হয়। একটি ওয়েবসাইট যখন অন্য একটি ওয়েবসাইটের পেজে লিঙ্ক করে তখন
তাকে ব্যাকলিঙ্ক বলে। ওয়েবসাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা ও অথরিটি বৃদ্ধির
মাধ্যমে আর্টিকেল রাঙ্কিং এ সাহায্য করে।
০.৩ এক লিংক এর মাধ্যমে ফাস্ট ইনডেক্সিং হয়। ব্যাকলিঙ্ক বেশি থাকলে গুগল
বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের বটগুলো কন্টেন্ট গুলোকে দ্রুত খুজে পায়, এর ফলে
কনটেন্টের রেঙ্ক বৃদ্ধি হয়।
০.৪ ব্যাকলিঙ্কের ফলে ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়। এর ফলে অডিয়েন্সরা সরাসরি
ওয়েবসাইটে আসতে পারে এবং কনটেন্ট খুঁজে পেতে সাহায্য করে। আর গুগল দেখে কোন
সাইডে ট্রাফিক বেশি হয় এটি কন্টেন্ট রাঙ্কিং এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়.
অন পেজ এস-ই-ও (On-Page SEO) এর মাধ্যমে রাঙ্কিংঃ
কন্টেন্ট রেংকিং এর জন্য অন পেজ SEO একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। On Page
SEO এখানে অন্যতম। এখন কিভাবে আমরা একটি ব্লগার ওয়েবসাইটকে SEO ফ্রেন্ডলি
করে তুলবো এবং কিভাবে কনটেন্ট কে রাঙ্কিং করাব তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
অন পেজ এস-ই-ও(SEO) এর নিয়মনীতি:
০.৫ প্রতিটি পোস্ট ইউনিকোড ফরম্যাট এ চলতি ভাষায় লিখতে হবে। পোষ্টের
টাইটেল অথবা শিরোনাম 5 থেকে 8 শব্দের মধ্যে হতে হবে।
০.৬ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কন্টেন্টের মধ্যে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা যাবে না।
০.৭ পোষ্টের পারমালিঙ্ক ইংরেজি কি ওয়ার্ডে এক শব্দ লিখতে হবে। ও
পারমালিঙ্ক এর মধ্যে সবগুলো অক্ষর ছোট হাতের লিখতে হবে। মধ্যে কোন
সাল ব্যবহার করা যাবে না।
০.৮ প্রতিটি পোস্ট অনলাইন ইনকাম, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, শিক্ষা,
স্বাস্থ্য চিকিৎসা, প্রবাসভবন গাইড, সমকালীন তথ্য ধর্মীয় ইত্যাদি বিষয়ে লিখতে
হবে।
০.৯ পোস্টে সকল আপলোডকৃত ছবি ওয়েব পি ফরমেটে ৫০ KB এর মধ্যে
সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
১০ অকেশন বা ইভেন্ট ব্লগিং এর ক্ষেত্রে উক্ত অকেশন এবং ইভেন্টের
কমপক্ষে ৩০ দিন আগে আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে।
১১ ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহারের নিয়মঃ কনটেন্ট এর মধ্যে ফোকাস
কিওয়ার্ড সর্বমোট ১০ বার ব্যবহার করতে হবে। পরে সেম ফোকাস
কিওয়ার্ড মডিফাই করে আরো পাঁচবার ব্যবহার করতে হবে। টাইটেল এর
শুরুতে ফোকাস কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। মেটা ডেসক্রিপশন এর শুরুতেই
ফোকাস কিওয়ার্ড লিখতে হবে। সুচীপত্র লেখার পর কোলন দিয়ে ফোকাস
কিওয়ার্ড লিখতে হবে। প্রথম হেডিং ফোকাস কিওয়ার্ড দিয়ে লিখতে
হবে। প্রথম হেডিং লেখার পরে যে প্যারা লিখতে হয় সেটা শুরুতে ফোকাস
কিওয়ার্ড রাখা লাগবে। শেষ কথার পরে কোলন দিয়ে ফোকাস কিওয়ার্ড
ব্যবহার করতে হবে।
১২ কনটেন্ট এর মধ্যে সর্বনিম্ন ৫ টি Longtail L.S.I কিওয়ার্ড
ব্যবহার করতে হবে।
১৩ যে সকল ছবি চুরি হয়ে যাওয়া সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোতে জলছাপ ব্যবহার
করতে হবে। ছবির মধ্যে কোন প্রকার সাল বা তারিখ ব্যবহার করা যাবে না।
১৪ প্রতিটি পোস্ট সর্বনিম্ন ১৫০০ শব্দ নিয়ে লিখতে হবে।
AI ব্যবহার হতে বিরত থাকাঃ
১৫ AI হচ্ছে Artificial Intelligence. কনটেন্ট রাইটিং এবং কনটেন্ট রাঙ্কিং
এর ক্ষেত্রে কোনোভাবেই এ AI বা Artificial
Intelligence ব্যবহার করা যাবে না। Artificial Intelligence ব্যাবহারের
ফলে কনটেন্ট রাঙ্কিং এ সমস্যা হয়। এর ফলে বিভিন্ন সময় কপিরাইট আসতে পারে। গুগল ও
বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন গুলো AI ব্যবহার করে কনটেন্ট লিখলে ওই কনটেন্ট ও ওয়েবসাইটগুলোকে সার্চ ইঞ্জিনের
রাঙ্কলিস্টে আনে না। বিশেষ করে গুগল Artificial Intelligence ব্যবহার করে
কনটেন্ট লিখলে AdSense দেয় না। অতএব আমাদের আর্টিকেল রাইটিং এর ক্ষেত্রে
এই আই কে পরিহার করা উত্তম।
শেষ কথাঃ কন্টেন্ট রাঙ্ক করার জন্য কিওয়ার্ড, ব্যাকলিঙ্ক, SEO, কনটেন্ট রাঈটিং, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই
কনটেন্ট রাঙ্ক করানোর জন্য এই বিষয় গুলোর দিকে নজর দেওয়া জরুরী।
শিখবো আমরা এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url